potrika360PostAd

ফরজ নামাজের কয়টি ওয়াক্ত


মোমেনদের জন্য নামাজ ফরজ। আজকে আমরা জানব ফরজ নামাজের কয়টি ওয়াক্ত, এবং আরও জানব ফরজ নামাজের সময়সীমা। যদি প্রশ্ন করা হয় ফরজ নামাজের কয়টি ওয়াক্ত? উত্তরে আমরা পাব ফরজ নামাজের ওয়াক্ত পাঁচটি। ফরজ নামাজের ওয়াক্ত যেমন জানা জরুরী বিষয়, তেমনি জানা জরুরী কোন নামাজ কোন সময় পড়তে হবে। নামাজের জন্য নির্দিষ্ট সময় নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে। আমরা ফরজ নামাজের কয়টি ওয়াক্ত এবং কোন সময় কোন নামাজ পড়তে হবে তার বিস্তারিত আলোচনা নিম্নে উপস্থাপন করব। 

ফরজ নামাজের কয়টি ওয়াক্তঃ

 ফরজ নামাজের কয়টি ওয়াক্ত, এর বর্ণনায় বলা হয়েছে, দিনে রাতে পাঁচ ওয়াক্তে নামাজ ফরজ। এই ওয়াক্ত পাঁচটির সীমাও সুনির্দিষ্ট করে দেয়া হয়েছে। এখানে উল্লেখ করা যেতে পারে যে ফরজ নামাজের কয়টি ওয়াক্ত এবং কি কি তার বিস্তারিত বর্ণনা, জোহর, আসর, মাগরিব, এশা, ফজর, এই পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ ফরজ। তবে ফরজ নামাজের কয়টি ওয়াক্ত এবং এর নাম ও সময়সীমা কুরআন মাজিদে সুস্পষ্ট ভাবে বন্যা হয়নি। পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের নাম ও সীমা কোরান শরীফের মধ্যে কোথাও সুস্পষ্টভাবে বর্ণিত হয়নি। তবে কোরানশরীফের বক্তব্যের রেশ ধরে রাসুলুল্লাহ (দঃ) যে ব্যাখ্যা ও বিধান বিবৃত করেছেন, যে শিক্ষা তিনি (দঃ) জিব্রাইল (আঃ) থেকে পেয়েছেন, আর যা তিনি তাঁর সুদীর্ঘ জীবনভর অবিচ্ছেদ্যভাবে পালন করে গেছেন এবং সমস্ত সাহাবায়ে কেরাম তা নিঃসঙ্কোচে অনুসরণ করে গেছেন, সেই শিক্ষা থেকে নামাজের পাঁচ ওয়াক্তের পরিচয় পাওয়া যায়।





আল্লাহ পাক কোরান মাজীদে এরশাদ করেন,

১১: ১১৩

وَأَقِمِ ٱلصَّلَوٰةَ طَرَفَىِ ٱلنَّهَارِ وَزُلَفًا مِّنَ ٱلَّيْلِ ۚ

 

অর্থঃ আর (হে মুহম্মদ দঃ) আপনি নামাজ প্রতিষ্ঠিত করুন দিনের দুই প্রান্তে আর রাতের কিছু অংশে।

কারো কারো মতে ‘দিনের দুই প্রান্ত’ বলতে এক প্রান্তে ফজরের ওয়াক্ত আর অপর প্রান্তে আসরের ওয়াক্ত বুঝানো হয়েছে। আর কারো মতে - ‘দুই প্রান্ত’ অর্থ দুই অংশ। প্রথম অংশে ফজরের নামাজ আর দ্বিতীয় অংশে যোহর ও আসরের নামাজ। আর রাতের অংশে মাগরিব ও এশার নামাজ। এইরূপ ব্যাখ্যা দ্বারা প্রথমোক্ত মতানুসারে দিনের দুই প্রান্তে ফজর ও আসর এবং রাতের কিছু অংশ বলতে মাগরিব ও এশা এই চার ওয়াক্তের কথা বর্ণিত হয়েছে; এবং জোহরের নামাজের কথা অন্য আয়াতে বর্ণিত হয়েছে। সে আয়াতটি নিচে উল্লেখ করা হলো।

 

أَقِمِ الصَّلَاةَ لِدُلُوكِ الشَّمْسِ إِلَىٰ غَسَقِ اللَّيْلِ وَقُرْآنَ الْفَجْرِ

 

 

উচ্চারণঃ আকেমিস্ সলাতা লে দোলুকিশ্ শামসে এলা গাসাক্বিল্ লায়লে ওয়া ক্বোরআনাল ফাজরে।

 

অর্থঃ সূর্য ঢলে পড়ার সময় থেকে রাতের অন্ধকার পর্যন্ত নামাজ কায়েম করুন আর ফজরের নামাজও। অধিকাংশ তাফসীরবিদগণের মতে এ আয়াতটি পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের জন্য একটি পূর্ণাঙ্গ নির্দেশ। লেদোলুকিশ শামসে এলা গাসাক্বিল্ লায়লে’ এর মধ্যে চার ওয়াক্ত নামাজ; জোহর, আসর, মাগরিব ও এশা সম্পৃক্ত হয়ে গেছে। জোহরের নামাজের প্রথম ওয়াক্ত তো সূর্য ঢলে পড়ার সাথেই শুরু হয়। 'কোরআনাল ফাজরে' দ্বারা ফজরের নামাজকে বুঝানো হয়েছে। তাই আমরা দেখতে পাই যে, আলোচ্য আয়াতে পাঁচ ওয়াক্তের নামাজই নির্দেশিত হয়েছে।  কোরান শরীফের বিভিন্ন আয়াত থেকে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের বিষয়টি প্রতিষ্ঠিত  24 | অন্যদিকে হাদীস থেকে তো সুষ্পষ্ট প্রমাণ মিলেই যে, ফরজ নামাজের ওয়াক্ত পাঁচটি। বিশেষ করে স্বয়ং আল্লাহ্ পাক তাঁর ফেরেশতা জিব্রাইল (আঃ) কে হযরত মুহম্মদ (দঃ) এর নিকট প্রেরণ করে তাঁর প্রিয় হাবিব (দঃ) কে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের নির্ধারিত সময়সীমা জানিয়ে দেন। এমন একটি হাদীস এই;  عن ابن عباس قال قال رسول الله (صلعم) امنی جبرئيل عند الظهر حين زالت الـشمس وكانـت العصر حين صارطل كل شيء مثلـه أفطر فصلی مردین البيت قدر الشراك وصلى وصلى بي المغرب حين افطر الصائم وصلى بـى العـشاء حين غاب الشفق وصلى بي الفجـر حـيـن حـرم الطعـام والشراب على الصائم – فلما كان الغد صلى بي الظهر حين كان ظله وصلى بي العصر حين صارظل كل شيء مثليـه العشاء الى وصلى بي المغرب حين أفطر الصائم و وصلى ثلث الليل وصلى بي الفجر فاسفر ثم التفت إلى فقال يا محمد هذا وقت الانبياء من قبلك والوقت ما بين هذين الوقتين  رواه ابوداود والترمذي

উচ্চারণঃ আন ইবনে আব্বাসিন (রাঃ) ক্বালা ক্বালা রাসুলুল্লাহে (দঃ) আম্মানী জিবরাঈলো এনদাল বায়তে মার্রাতায়নে ফাসল্লা বিয়াজ্‌ জোহরা হীনা জালাতিশ শামসো ওয়া কানাত কাদরাশ্ শেরাকে, ওয়া সল্লা বিয়াল আসরা হীনা সরা যিল্লো কুল্লে শাইন মেসলাহু ওয়া সল্লা বিয়াল মাগরেবা হীনা আফত্বরাস সয়েমো ওয়া সল্লা বিয়াল এশাআ হীনা গাবাশ শাফারো, ওয়া সল্লা বিয়াল ফাজা হীনা হার্রামাত ত্বয়ামো ওয়াশ্ শারাবো আলাস সয়েমে। ফালাম্মা কানাল গাদ্দো, সল্লা বিয়াজ জোহরা হীনা কানা যিল্লোহু মেসলায়হে, ওয়া সল্লা বিয়াল আসরা হীনা কানা যিল্লোহু মেসলাহু, ওয়া সল্লা বিয়াল মাগরেবা হীনা আরাস সয়েমো, ওয়া সল্লা বিয়াল এশাআ এলা সোলোসিল লায়লে, ওয়া সল্লা বিয়াল ফাজরা ফা আসফারা; সুম্মালতাফাতা এলাইয়া, ফাক্কালা ইয়া মোহাম্মাদো হাজা ওয়াকতোল আমবিয়ায়ে মিন ক্বাবলেকা, ওয়াল ওয়াকতো মা বায়না হাজায়নিল ওয়াকতায়নে। - রাওয়াহু আবু দাউদ অত্তিরমিজী।

 

অর্থঃ হযরত ইবনে আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (দঃ) বলেছেন: হজরত জিব্রাইল (আঃ) কাবা ঘরের কাছে দুবার আমার ইমামতি করেছেন। (প্রথমবারে) তিনি আমাকে জোহর পড়ালেন যখনই সূর্য ঢলে গেল, আর তা ছিল জুতার দোয়ালীর (প্রস্থের) পরিমাণ (অর্থাৎ সূর্য ঢলার সামান্য পরেই), আর আসর পড়ালেন যখনই যে কোন বস্তুর ছায়া সে বস্তুর একগুণ (লম্বা) পরিমাণ হলো, এবং আমাকে মাগরেব পড়ালেন এমন সময়, যে সময় রোজাদার রোজা খোলে। আর এশা পড়ালেন যে সময় (পশ্চিমাকাশের) শফক্ব দূরীভূত হলো (অর্থাৎ পশ্চিম আকাশের লাল আভা বা লাল আভার পরের সাদা আভা দূরীভূত হলো)। আর ফজর এমন সময় পড়ালেন, যে সময় রোজাদারের উপর খানাপিনা করা হারাম হয় (অর্থাৎ সুবেহ সাদেক আরম্ভ হওয়া মাত্র)।

 

যখন দ্বিতীয় দিন হলো, তিনি আমাকে জোহর পড়ালেন যখন বস্তুর ছায়া তার একগুণ (লম্বা) হলো, আসর পড়ালেন যে সময় বস্তুর ছায়া

দু'গুণ (লম্বা) হলো: আর এমন সময় মাগরিব পড়ালেন যখন রোজাদার রোজা খোলে (অর্থাৎ প্রথম বারের মত সময়েই); এবং এশা এমন সময় পড়ালেন যখন রাত এক তৃতীয়াংশ হলো। অবশেষে ফজর পড়ালেন যখন সকাল (সুবেহ সাদেক) খুব ফর্সা হয়ে গেল। অতঃপর তিনি আমার প্রতি লক্ষ্য করে বললেন, হে মুহম্মদ (দঃ) এতো আপনার আগের নবীদের (নামাজের) সময়। নামাজের ওয়াক্ত এই দু’ (বারের) সময়ের মধ্যে। এটা আবু দাউদ ও তিরমিজি বর্ণনা করেছেন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

পত্রিকা ৩৬০ এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url
potrika360PostAd
potrika360PostAd
potrika360PostAd
potrika360PostAd