হজ্জ ও ওমরাহ্র সংজ্ঞা,এর হুকুম ও ফজিলত
হজ্জ ও ওমরাহ্র সংজ্ঞা,এর হুকুম ও ফজিলতঃ
নিম্ন তো বিষয়গুলো মুসলমান হিসেবে আমাদের জানা অপরিহার
কা’বার ঘর পরিচয়:
পৃথিবীর নাভীর স্থল পবিত্র মক্কায় আল্লাহর হুকুমে পিতা ও পুত্র হযরত ইব্রাহিম ও ইসমাইল আলাইহিস সাল্লাম পৃথিবীর প্রথম ইবাদত গৃহ হিসাবে কাবা গৃহ নির্মাণ করেন। (সূরা আল ইমরান ৯৬,৯৭)
যাকে আল্লাহর মুকিম মুসাফির ও তাওয়াফকারীর ও ইত্তেকাফকারীদের জন্য সর্বদা পবিত্র রাখার নির্দেশ দিয়েছেন। (সূরা বাকারা ১২৫)
আল্লাহ বাইতুল্লাহকে মানবজাতির মিলন কেন্দ্র ও নিরাপদ স্থান হিসাবে এবং মানুষের জন্য কল্যাণ মুক্তবিহ হিসাবে অভিহিত করেছেন যা কাফেরদের অধিকার থেকে চিরকাল মত্ত থাকবে ইনশাল্লাহ অতপর তিনি মুসলিম উম্মাহকে তাওহিদী এই বিশ্ব কেন্দ্রটিকে সর্বদা মূর্তি ও মিথ্যা থেকে মুক্ত রাখার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন (হজ্জ ২২/৩০)
বংশের দুর্ভাগ্যঃ
দুর্ভাগ্য শেষ নবী মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম ইসমাইল বংশের হওয়ায় বিমাতা ছোট ভাই ইসাহাক তথা ইসরাইল বংশের মুসা ও ঈসা আঃ এর অনুসারী ইহুদী-নাছারাগণ ইব্রাহিমী কাবাই হজ্জ করেন না। মুসলিম উম্মার বিরুদ্ধে তাদের বৈমাত্রেয় হিংসা অদ্যাবধি সক্রিয় রয়েছে/ মক্কার হয় এবং মূর্তি দিয়ে ভরে দেয়। পরে তাদের সন্তান করেন যা পদ্মাবতী মুক্ত রয়েছে এবং কেয়ামত পর্যন্ত থাকবে ইনশাআল্লাহ।
হজ্জ এর উদ্দেশ্যঃ
মুমিনকে আল্লাহর সান্নিধ্যে পৌঁছে দেয় এবং তার আত্মিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। একই সাথে হজ্জ মুসলিম উম্মাহকে আল্লাহর দ্বীনের স্বার্থে ঐক্যবদ্ধ ও শক্তিশালী মহাজাতিকে পরিণত হতে উদ্বুদ্ধ করে।
হজ্জ এর সংজ্ঞাঃ
হজ্জ এর আভিধানিক অর্থ সংকল্প করা পারিভাষিক অর্থ আল্লাহর নির্দেশ পালনার্থে ও তার নৈকট্য লাভের উদ্দেশ্যে তাওয়াফ শাহী ও কুকুরে আরাফা সহ অন্যান্য ইবাদত সমূহ পালনের জন্য হজ্জের মাস সময়ে বাইতুল্লাহ জিয়ারতের সংকল্প করা।
ওমরাহ্ এর সংজ্ঞাঃ
ওমরাহ্ এর আভিধানিক অর্থ জিয়ারত করা আবাদ স্থানে যাওয়ার সংকল্প করা পারিভাষিক অর্থ আল্লাহর নৈকট্য লাভের উদ্দেশ্যে বছরে যেকোনো সময় তাওয়াফ ও সাঈ সহ অন্যান্য ইবাদত পালনের জন্য বাইতুল্লাহ জিয়ারতের সংকল্প করা।
হজ্জ ও ওমরাহ্র সময়কাল
হজ্জের জন্য নির্দিষ্ট তিনটি মাস হল শাওয়াল জিলকদাহ জিলহাজহ। এ মাসগুলির মধ্যে যেকোনো সময় হজ্জেরাম বেদে বায়তুল্লাহর উদ্দেশ্যে রওনা দিবে এবং হজ্জের নিয়তে নয় জিলহজ্জ্ব তারিখে আরাফা ময়দানে অবস্থান করবে এটি হলো হজ্জের প্রধান রোকন ০৯ জিলহাজহ ফজর হতে ১০ এ জুলহাস ফজর পর্যন্ত সময়ের মধ্যে আরাফা ময়দানে যে কোন স্থানে হজ্জের নিয়তে সজ্ঞানে পবিত্র বা অপবিত্র যে কোন ভাবে অবস্থান করলে অথবা ময়দানের উপর দিয়ে হেঁটে গেলে খারাপ হয় অবস্থানের ফরজ আদায় হয়ে যাবে আর এটি নাহলে হজ্জ বিনষ্ট হবে এবং তখন এটি তার জন্য সেফ ওমরা হিসাবে গণ্য হবে। পক্ষান্তরে ওমরাহ্ করা সুন্নত যা বছরে যেকোনো সময় করা যায়। এজন্য আরাফাতের ময়দানে অবস্থান করা শর্ত নয়।
হজ্জের হুকুমঃ
নিরাপদ ও সুষ্ঠ যোগাযোগ ব্যবস্থা সহ দৈহিক ও আর্থিকভাবে সামর্থ্যবান মুমিনের জন্য জীবনে একবার হজ্জ করা ফরজ। হজ্জের জন্য পাথেয় অপরিহার্য আল্লাহ বলেন তোমরা পথেও সাথে নিয়ে নাও। আর শ্রেষ্ঠ পাথেয় হলো আল্লাহ ভীরুতা কিছু লোক আল্লাহর উপর ভরসা নামের পাথেয় ছাড়াই হজ্জ ও ওমরা করেন ও সেখানে গিয়ে ভিক্ষা করেন তারা এটি থেকে বিরত থাকুন কারণ তাদের উপরে হজ্জ্ব ফরজ নয়। অধিকত্ত্ব অধিক বার ওমরা করা নফল রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম হজ্জ একবার বাকি সব নফল। নবম অথবা দশম হিজরিতে হজ্জ ফরজ হয় হাফেজ ইবনুল কাঈয়িম (রহঃ) এ মদকেই অগ্রাধিকার দিয়েছেন। তবে জম্বুর বিদ্বান এর মতে ষষ্ঠ হিজরীতে হজ্জের হুকুম নাযিল হয় এবং রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম দশম হিজরীতে জীবনে একবার ও শেষবার সপরিবারে হজ্জ করেন তিনি জীবনে মোট চার বার ওমরা করেছেন প্রথমটি ষষ্ঠ হিজরীতে যা মক্কাবাসীদের বাধার কারণে সফল হয়নি পরবর্তীতে কাজা আমরা তৃতীয় অষ্টম হিজরিতে হুনাইন যুদ্ধের পর এবং চতুর্থটি দশম হিজরিতে বিদায় হজ্জের সাথে যার উপর ওমরাও ফরজ আল্লাহ বলেন আর তোমরা আল্লাহর (বাকারা ১৯৬) ওমরাকে একত্রে খরচ বলা হয়েছে কিন্তু যার উপর ফরজ হয়নি তার ওপর ওমরা করার সুন্নত।
হজ্জের ফজিলতঃ
১। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম বলেন যে ব্যক্তি আল্লাহর উদ্দেশ্যে হজ্জ করেছেন। যার মধ্যে সে অশ্লীল কথা বলেননি বা অশ্লীল কার্য করেননি সে হজ্জ হতে ফিরবে সদ্য প্রসলিত সন্তানের নেয় নিষ্পাপ।
২। রাসূল সাল্লাল্লাহু সালাম বলেন কবুল হজ্জের পুরস্কার কিছুই নেই জান্নাত ব্যতীত
কবুল হজ্জের নিদর্শন সমূহঃ
বা কবুল হজ্জ্জ বলতে ওই হজ্জকে বোঝায়
(ক) যে হজ্জে কোন গুনাহ করা হয়নি।
(খ) যে হয়েছে আরকান হাকান সহি হাদিস মোতাবেক যথাযথভাবে হয়েছে।
(গ) হজ্জ থেকে ফিরে আসার পর সে পূর্বের চাইতে উত্তম হয়েছে এবং পূর্বের গুনাহের পুনরায় লিপ্ত হয়নি।
রাসূল সাল্লাল্লাহু সালাম বিদায় হজ্জের ভাষণে বলেন হে লোক সকল অতিসত্বর তোমরা তোমাদের প্রতিপালকের সঙ্গে মিলিত হবে অতঃপর তিনি তোমাদেরকে তোমাদের আমল সম্পর্কে জিজ্ঞেস করবেন অতএব সাবধান তোমরা যেন আমার পরে পুনরায় পথভ্রষ্ট হয় না।
৩। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম এরশাদ করেন ইসলামে হিজরত ও হজ্জ মুমিনের বিগত সকল গুনাহ ভসিয়ে দেয়।
৪।তিনি আরো বলেন তোমরা হজ্জ ও ওমরাহ সম্ভব হলে সাথে সাথে কর কেননা এই দুটি মুমিনের দরিদ্রতা ও গুনাহ সমূহ দূর করে দেয় যেমন স্বর্ণকারের আগুনের কাপড় লোহা ও স্বর্ণ ও রক্তের ময়লা ছাপ করে দেয় তিনি আরো বলেন তোমরা সর্বদা হজ্জের মাসসমূহের মধ্যে প্রবেশ করবে কেয়ামত পর্যন্ত সম্ভবত সে কারণে রাসুল সাঃ সাহাবীগণকে প্রথমে ওমরা করে পরে হজ্জ করার আর তামাত্তু হজ্জ্জ করার তাগিদ দিয়েছেন এবং না করলে ক্রোধ প্রকাশ করেছেন।
৫।রাসুল সাঃ বলেছেন নিশ্চয়ই রমজান মাসের ওমরাহ্ একটি হজ্জের সমতুল্য অন্য বর্ণনায় এসেছে নিশ্চয়ই রমজান মাসে ওমরা করা আমার সাথে হজ্জ করার নেয়।
৬।হযরত আয়েশা রাদিয়াল্লাহু তা'আলা আনহা বলেন আমি রাসূল সাল্লাল্লাহু সালামের নিকটে জিহাদের অনুমতি চাইলে তিনি বলেন তোমাদের জিহাদ হল হজ্জ অন্য বর্ণনায় এসেছে তিনি বললেন হে আল্লাহ রাসুল মহিলাদের উপর জিহাদ আছে কি? তিনি বললেন আছে, তবে সেখানে যুদ্ধ নেই আর সেটি হল হজ্জ ও ওমরাহ্। রাসূল সাল্লাল্লাহুসালাম বলেন কখন বৃদ্ধ ছোট দুর্বল ও মহিলা সকলের জন্য জেহাদ হল হজ্জ ওমরহ। তিনি বলেন শ্রেষ্ঠ আমল হলো তার রাসূলের উপর ইমান আনা অতঃপর শ্রেষ্ঠ হলো আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ করার এরপর শ্রেষ্ঠ হলো কবুল হজ্জ।
৭। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম বলেছে আল্লাহ মেহমান হলো তিনটি দল <>আল্লাহর রাস্তায় যুদ্ধ কারী, <> হজ্জ করি <>ওমরাহ্ কারী
মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিন আমাদের উপরোক্ত বিষয়গুলো মেনে চলার তৌফিক দান করুন (আমিন)
পত্রিকা ৩৬০ এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url